কবুতরের শীতকালীন যত্ন
অনেক সময় কবুতরের অনেক রোগের জীবানু শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে, এবং কবুতরের ভিটামিন এর অভাব জনিত রোগ, ক্রিমি মুক্ত ও সঠিক দৈহিক বৃদ্ধি নিশ্চিত রাখতে মাসিক কোর্সের গুরুত্ব অনেক । নতুবা হটাৎ করে রোগের আক্রমনে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে আপনার ভালবাসার কবুতরের ।
গিরিবাজ ও উড়ানোর কবুতর এর করণীয়:
১) যারা গিরিবাজ পালি তারা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি কবে শীত আসবে ,অনেক কষ্ট করে কবুতর পালি সারা বছর ।
কেউ উড়ানোর জন্য , কেউ টস করে ,কেউ রেস করে । শীতে কবুতর পালনের মজাই আলাদা ।
আমাদের উড়ানোর কবুতর বেশীর ভাগ সময় ই আটকা থাকে , ২/১ জন হয়তো ছেড়ে রাখি ।
অনেক বড় বড় কবুতর পালক আছেন, এক একজনের কবুতর পালন পদ্বতি এক এক পদ্ধতি । তারা তাদের সিস্টেম এ পালে যা অনেক গোপন ।
অনেকে শীত আসার ৩ মাস আগেই কবুতরকে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে আটকে দেয় , আর কবুতরের খাবার পাণিতে অল্প খাবার লবণ যেমন ১ লিটার এ ২ গ্রাম দিয়ে দেয় ।
তখন কবুতর তার শরীরের পালক পরে যায় বা পালটায় নতুন পালক গজায় ।
অনেকে রাজ পর বা মূল পালক ১০ টি করে তূলে দেয় তাতে একই সময় সব পালক ঊঠে ।কবুতরের সব পালক একই রকম অবস্থায় থাকে , তাতে উড়তে সুবিধা হয় । না হয় অনেক সময় ভালো কবুতর, পালক সমস্যার জন্য বাজীতে দেওয়া যায় নাহ । বা ঊড়াড় সময় পরে যায় বা হারিয়ে যায় বা কাচা পাখ থাকলে পাখ ফেটে রক্ত বের হয় । একটা শীত সে আর উড়তেই পারে ণাহ ।
যাদের কবুতর আটকা থাকে তারা এখন থেকেই বাহিরে ছেড়ে রোদ এ রাখছেন । কবুতর হাল্কা করার জন্য । ১০/১৫ দিন নরমাল ছাড়া থাকলে ওরা আস্তে আস্তে হাল্কা হবে । নিজেরাই অল্প অল্প করে ঊড়ে ফ্রি হবে ।
খেয়াল রাখতে হবে , শীতে কবুতরের জন্য উত্তরের বাতাস খূব ক্ষতিকর ।
অনেকেই অবহেলা করে বা কবুতর ধরার জন্য বিকাল বা সন্ধ্যা পর্যন্ত কবুতর বাহিরে রাখে তখন বিকালের উত্তরের বাতাস কবুতরের গায়ে লেগে ঝীমায়, অসুস্থ হয় , শীতে কবুতরকে অবশ্যই ১-২ টার মধ্যে আটকাতে হবে ।
হাল্কা পর্দা , তা সুতী কাপড়ের বা ছালার চট দিতে হবে যাতে হাল্কা বাতাস চলাচল ।
অনেকেই ট্রিপাল বা প্লাস্টিক এর ভারি পর্দা দেন যা ক্ষতিকর অনেক সময় এতে গ্যাস জমে কবুতর অসুস্থ হয় বা মারা যায় ।
২) আমরা যারা শখ করে ফেঞ্চি বা শৌখিন কবুতর পালি তারা সারা বছরই আনন্দে থাকে , শীতে পড়ে যায় সবাই দুশ্চিন্তায় !
প্রতি শীতের আগমনের আগে ( শীত এবং গরমের মাঝা মাঝি সময় ) এবং শীত আসার পরে যেসব কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে সেইগুলা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় ।
অনেকের ই আমরা শুনতে পাই আহাজারি আমার সব শেষ !!!
যেগুলো আমরা প্রতি মাসে ৫-৭ দিন খাওয়াতে পারি ।
১) বি কম ভিট / B com vit -B1,B2,B6 ।
২) ক্যালপ্লেক্স / CALPLEX -CALCIU...
৩) MAXI GROW/ MAXI FORT/ MEGAVIT/ RENA WS -MULTI VITAMIN
৪) HAMICO PH -FOR SALMONELLA । ৫) ৬০-৯০ দিন পর পর কৃমির ঔষধ খাওয়ানো ।
৬) ১ লিটার পাণিতে ১ চা চামচ লেবুর রস , ১ গ্রাম চিনি , ১ গ্রাম লবণ দিয়ে মিশিয়ে ।
এই গূলা প্রতি লিটার পানিতে ১-৪ নং ১.৫-২ মিলি./ গ্রাম দিন ।এই গূলা কবুতর এর রোগ প্রতি রোধ ক্ষমতা বাড়ায় । ঔষধ গূলো আলাদা আলাদা খাওয়াবেন ।
**বনাজি ওষুধ !
১) বহেরা ২) হরতোকি ৩)আমলোকি ৪) চিরতা এই ৪ টা জিনিষ শুকনা পাওয়া যায় বাজারে , এই গুলা ১ লিটার পানিতে ৪/৫ পিছ দিয়ে ১ দিন আগে ভিজাবেন এবং ঐ পানি কবুতর কে খাওয়াবেন । এই গুলা কবুতর এর কৃমি , হজম এর সমস্যা , কবুতর কে সতেজ রাখার কাজ করবে , হরমোন বাড়ায় ।
শীতে ঊড়ানো কবুতরের খাবার ঃ
কবুতরের খাবারে কিছু বাড়তি আয়োজন থাকা দরকার যারা এমনি পালি , বা উড়ায় বা রেস করি । সাধারণত নীচের খাবার দিতে পারেন উড়ানোর কবুতর কে ।
১) ধান ৫০% ২) গম ১০% ৩) রেজা ২০/৩০ % ৪) ভুট্টা বা ভুট্টা ভাঙ্গা ১০ % ( অনেকে দেয় , অনেকে দেয় নাহ ) ৫) ৭% ডাবলী ( অনেকে দেয় , অনেকে দেয় নাহ ) ৬) ৩ % ছোলা বূট । ( অনেকে দেয় , অনেকে দেয় নাহ )
শীতে ঊড়ানো ছাড়া বা শৌখিন কবুতরের খাবার ঃ
২) গম 30 % ৩) রেজা 50 % ৪) ভুট্টা বা ভুট্টা ভাঙ্গা ১০ % ( অনেকে দেয় , অনেকে দেয় ণাহ ) ৫) ৭% ডাবলী ( অনেকে দেয় , অনেকে দেয় ণাহ ) ৬) ৩ % ছোলা বূট । ( অনেকে দেয় , অনেকে দেয় নাহ )
শীতের জন্য বাড়তি আয়োজন অন্তত ১/২ % প্রয়োজন মনে করলে দিতে পারেন নীচের যেকোন ১/২ আইটেম , তবে তেল জাতীয় খাবার দিলে কবুতর দৌড়ায় মা মোচড়ায় কিন্তু উড়ে ভাগে কম ।( অনেকে ১৫-২০ আইটেম ও খাওয়ায় ) ।
৭) তিশি ৮) সরিষা ৯) কূষূম ১০) সূর্য মূখী
তেল জাতীয় খাবার , শরিরে চর্বি তৈরি করে যা শরির গরম রাখতে সাহায্য করে , প্রচণ্ড শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষায় সাহায্য করে ।
একটা জিনিস মনে রাখবেন ভালোর শেষ ণেই , অনেকেই ঘি , মাখন , ফলের রস , ও খাওয়ায় কিন্তু আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং সাধারণ খাবার ই দেওয়া ভালো । শীত ছাড়া সারা বছর ই অনেকে তেল জাতীয় বা মিক্সার খাবার দেন যা কবুতরের জন্য ক্ষতি কর ।
অনুরোধঃ আমার জানা খুব কম , যারা ভাল জানে তাদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করুন । ভুল চিকিৎসা করবেননা ।


0 মন্তব্যসমূহ