কবুতরের বাসস্থান/ঘর তৈরী

কবুতরের বাসস্থান/ঘর তৈরী

কবুতরের বাসস্থান/ঘর
কবুতরের ঘর

কবুতর পালন করে সফল হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে কবুতরের জন্য উপযুক্ত বাসস্থান তৈরী করা। তাই কবুতর সংগ্রহ করার আগে কবুতরের বাসস্থান তৈরী করতে হবে। কবুতরের ঘর কেমন হবে সেটা নির্ভর করবে আপনি কোন জাতের কবুতর পালবেন (দেশী না ফেন্সী) ? দু এক জোড়া পালবেন নাকি খামার করবেন, ছোট জাতের পালবেন নাকি বড় জাতের পালবেন, ছেড়ে পালবেন নাকি খাঁচায় বেধে পালবেন ইত্যাদীর উপর।

কবুতরের খোঁপ/খাঁচা তৈরীর ক্ষেত্রে সাইজ, অবস্থান, উচ্চতা, তৈরীর উপাদান ইত্যাদী মাথায় রাখতে হবে । কবুতরের ঘর/খোঁপ আপনি নিজেও বানাতে পারেন অথবা মিস্ত্রি দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন,খোজ করলে আপনার শহরে রেডিমেটও পেতে পারেন । বাড়ির আঙিনায়, বাসার ছাদ বা জানালার কার্নিশে এসব খোপ বানাতে পারেন। ছেড়ে পালা আর খাচায় পালনের জন্য কিছুটা ভিন্ন পদ্বতি অবলম্বন করতে হবে।

অবস্থান:
১.কবুতরের ঘর এমন জায়গায় বানাতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস আসা যাওয়া করে।
কারন সূর্যের আলো যেমন পাখির দেহে ভিটামিন-ডি সৃষ্টিতে সাহায্যে করে তেমনি পরিবেশও জীবাণুমুক্ত রাখে।
কবুতরের ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কারণ দূষিত বাতাস বা পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাবে পাখির স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে।
২.এমন যায়গায় তৈরী করতে হবে যেখানে বৃষ্টিতে বাসস্থান ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

৩. ইদুর,বিড়াল বা এধরনের ক্ষতিকারক পশুপাখি আক্রমণ করতে না পারে এমন যায়গায় তৈরী করতে হবে।

৪. দক্ষিণমূখী হলে বেশী ভালো। তাহলে কবুতর গরমে বাতাস এবং শীতে রোদ দুটোই পাবে ।

৫. মাটি থেকে ঘর/খোঁপের উচ্চতা ৮ থেকে ১০ ফুট দিতে পারেন।

খোঁপ/খাঁচার সাইজ:

আপনি যদি দেশী কবুতর পালেন বা ছেড়ে পালেন তাহলে প্রতি জোড়ার জন্য ১ বর্গফুট বা তার চেয়ে একটু বেশি হলে যথেস্ট। খোপের সামনে কিছু বাড়তি জায়গা বারান্দা রাখবেন, যাতে কবুতর সেখানে ঠিকমত দাড়াতে পারে এবং দুর থেকে উড়ে এসে বসতে পারে ৷ একটি খামারের একসাথে ৩০ থেকে ৪০ জোড়া কবুতর পালন করা আদর্শ। খোপ ২ বা ৩ তলা বিশিষ্ট করতে পারেন।

খাঁচায় কবুতর পালন পদ্ধতি

আর যদি খাচায় পালেন তাহলে প্রতিজোড়া ছোটআকারের কবুতরের জন্য ৩০ সে. মি(দৈর্ঘ্য) ৩০ সে.মি. (প্রস্থ) ২০ সে.মি(উচ্চতা) এবং বড় আকারের কবুতরের জন্য ৫০সে. মি(দৈর্ঘ্য) ৫৫সে.মি. (প্রস্থ) ৩০সে.মি(উচ্চতা) করতে পারেন।এক জোড়া কবুতর যাতে ঘরের ভিতর স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে ফিরতে পারে তা লক্ষ্য রেখে খাঁচা নির্মাণ করতে হবে ।
খাঁচার শিকগুলো দেড় ইঞ্চি দূরত্বে দিলে ভাল ৷ এতে সব কবুতরই ভালভাবে মাথা বাহিরে দিতে পারবে ৷ বড় কবুতর হলে ফাঁক আরও বেশি দিতে পারেন ৷


খাঁচা/খোঁপ তৈরীর উপাদান

কাঠ, টিন, বাঁশ, খড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করা যায়। যদি ছেড়ে পালেন তাহলে
খামারের আশেপাশে নরম, শুষ্ক খড়-কুটা রেখে দিলে তারা ঠোঁটেকরে নিয়ে নিজেরাই বাসা তৈরি করে নিবে। আর খাঁচার ভিতর মাটির সরা বসিয়ে রাখলে কবুতর সরাতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফুটায়। প্রয়োজনে চারপাশে নেট লাগাতে পারেন ক্ষতিকারক প্রাণী থেকে রক্ষা করার জন্য।

অন্যান্য বিষয়:

খাবার ও পানির পাত্র কবুতরের ঘরের কাছেই রাখবেন। খাবার ও পানির পাত্র খাঁচার বাহিরের দিকে রাখতে হবে ৷ এতে পাত্র নোংরা কম হবে ৷ খাবার ও পানির পাত্র ভিতরে থাকলে কবুতর পাত্রের মধ্যে পা দেয় ৷ এতে পাত্রে রাখা খাবার ও পানির মধ্যে জীবানু চলে যায় ৷
কবুতরের ঘর পরিষ্কার এবং শুকনা রাখতে হবে।
প্রতিমাসে দু’চার বার করে কবুতরের ঘরের বিষ্ঠা পরিষ্কার করতে হবে। ডিম পাড়ার সময় যাতে সহজেই খড় সংগ্রহ করতে পারে সে জন্য কবুতরের ঘরের আশপাশে খড় রেখে দিতে হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

Unknown বলেছেন…
ধন্যবাদ ❣️❣️