কবুতরের টাল রোগ বা ঘাড় বাকা রোগ

কবুতরের টাল রোগ বা ঘাড় বাকা রোগ

কবুতরের টাল রোগ বা ঘাড় বাকা রোগ, কবুতর টাল হলে কি করবেন, কবুতর টাল হলে করণীয়, কবুতরের টাল রোগের চিকিৎসা, কবুতরের ঘাড় বাকা রোগের চিকিৎসা, কবুতরের টাল রোগের ওষুধ, কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা
টাল রোগে আক্রান্ত কবুতর
আজকের পর্বে আমি কবুতরের টাল রোগ বা ঘাড় বাকা রোগ নিয়ে আলোচনা করবো । টাল রোগ কবুতর পালকদের কাছে  অন্যতম পরিচিত একটি রোগ । টাল রোগে আক্রান্ত কবুতর এর ঘাড় প্যারালাইসড হয়ে যায় । এই রোগে আক্রান্ত কবুতর মাথা সোজা করে দাড়াতে পারে না। উড়তে গেলে পড়ে যায় বা পিছনের দিকে চলে যায়। নিজ থেকে খেতে পারে না। চিকিৎসা না করালে আক্রান্ত কবুতরের মৃত্যু অবধারিত । সাধারণত এক খামারে এক সাথে বা সামান্য আগে বা পড়ে অনেক কবুতর আক্রান্ত হতে দেখা যায় । যদিও এটি ছোয়াচে রোগ নয় । এক সাথে অনেক কবুতর আক্রান্ত হবার পিছনে কারণ হল যে কারণে একটি কবুতর আক্রান্ত হয়েছে সেই একই কারণ বাকী গুলোর ক্ষেত্রেও হয়েছে। আসুন জেনে নেয়া যাক কেন এই টাল রোগ হয় বা এর প্রতিকার, প্রতিরোধ কি ?

কারণঃ
ভিটামিন বি এর অভাবে এই রোগ হয়। ভিটামিন বি পানিতে দ্রবনীয় । কবুতরের শরীরে এই ভিটামিন জমা থাকে না । কবুতরের শরীরে নিয়মিত ভাবে এই ভিটামিনের দরকার পড়ে।ভিটামিন বি এর ঘাটতি হলে কবুতর এই টাল বা  ঘাড়বাকা রোগে আক্রান্ত হয় ।

লক্ষণঃ
১. ঘাড় বাকা হয়ে যায় বা পিছনের দিকে হেলে পড়ে।
২. খাবারে ঠিক মত ঠোকর দিতে পারে না।
৩.  সোজা হয়ে দাড়াতে বা উড়তে পারে না।
৪. গোল হয়ে চক্রাকারে ঘুরতে পারে।
৫.  দিক বা লক্ষ ঠিক থাকে না।
৬. মাথা ঝুলে যায়।
৭. খেতে না পেরে দুর্বল হয়ে যায়।
৮. ঝিমাতে পারে ইত্যাদি।

প্রতিকারঃ
এই রোগ হুট করে হয় না এবং সারতে ও সময় লাগে বেশ ।এই রোগে আক্রান্ত হলে  দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
নিম্নে দেয়া সব গুলো কাজ ই করতে হবে।

ক) প্রথম পর্যায়
১. Nuro B (Human) injection 1/3cc (১সিসি এর ৩ ভাগের এক ভাগ)
করে টানা ১০ দিন দিতে হবে । সকালে খাবার দেয়ার আগে injection দিতে হবে। বুকের নরম অংশে injection দিবেন । সাবধান পা বা ঘাড়ে দিতে যাবেন না। অবশ্যই insulin or baby niddle ব্যবহার করবেন।
২. Injection দেবার পর হাতে ধরে খাওয়াবেন যদি নিজে থেকে খেতে না পারে ।
৩. দিনে ২/৩ঘন্টা রোদে দিবেন বা হেয়ার ড্রেয়ার ব্যবহার করবেন দিনে ২/৩বার।
৪. রোদে দিলে সাথে খাবার পানি দিবেন এবং এক কোণে একটু ছায়ার ব্যবস্থা করবেন যাতে প্রচন্ড রোদে কবুতর একটু ছায়া পায় ।
৫. রাইস স্যালাইন হাতে ধরে খাইয়ে দিবেন। ৩০সিসি খাওয়াবেন বয়স অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে। একবারে না খাইয়ে বাব বার খাওয়াবেন। এতে কবুতর শরীরে শক্তি পাবে।
৬. ঘাড়ে হালকা ম্যাসেজ করতে পারেন।
৭. কবুতরটিকে আলাদা রাখতে হবে।

খ) দ্বিতীয় পর্যায়
১০ দিন ইঞ্জেকশন দেবার পর ভালো না হলে আরো ৫দিন একই নিয়মে ইঞ্জেকশন দিবেন। কোন মতেই কিন্তৃ ১৫দিনের বেশি ইঞ্জেকশন দিবেন না।

গ) তৃতীয় পর্যায়
মোট ১৫দিন ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরও যদি ভালো না হয় তাহলে ১৬তম দিন হতে vitamin b complex + codliver tab. ১টা করে ৫দিন।

প্রতিরোধঃ
মাসে কমপক্ষে ৪দিন ভিটামিন বি প্রয়োগ করবেন । ভিটামিন বি হিসেবে Toxinil, bio-vit ইত্যাদি দিতে পারেন। ১লি পানিতে ১সিসি করে টানা ৪দিন দিবেন ।
কবুতর সুস্থ হলে গোসল দিয়ে শুকিয়ে খামারে রাখুন। খামারে রাখার পর এক দিন স্যালাইন দিন এবং ২/১দিন প্রোবায়োটিক দিন।

কবুতর অসুস্থ হলে একে না মেরে এর যত্ন নিন, চিকিৎসা করুন ।
(মুল লেখক-রাব্বি ভাই)

tag:কবুতরের টাল রোগ বা ঘাড় বাকা রোগ, কবুতর টাল হলে কি করবেন, কবুতর টাল হলে করণীয়, কবুতরের টাল রোগের চিকিৎসা, কবুতরের ঘাড় বাকা রোগের চিকিৎসা, কবুতরের টাল রোগের ওষুধ, কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ